বাউফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেনীকক্ষ ও শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত

বাউফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেনীকক্ষ ও শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত

মোঃ দেলোয়ার হোসেন, বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:  পটুয়াখালীর বাউফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট ও শ্রেনী কক্ষের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। ফলে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাজারো শিক্ষার্থী। উপজেলার ২৩৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১০৮টিতে নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক। অবসর গ্রহন,অন্যত্র বদলি ও মৃত্যুজনিত কারনে সৃষ্ট পদগুলো শূন্য হলেও হয়নি শিক্ষক নিয়োগ। বর্তমানে ৬০টি স্কুলে সহকারি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে স্কুলগুলোতে লেখাপড়া চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। সহকারি শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে চালানো এ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অধিকাংশ সময় অফিশিয়াল কাজে উপজেলা সদরে অবস্থিত শিক্ষা অফিসে আসতে হয়। এতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।এছাড়াও রয়েছে শ্রেনীকক্ষের সংকট।
৪৬ নং বীরপাশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ আলো বাতাসহীন টিনশেড ঘরে চলছে পাঠদান । বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ লতিফ বলেন, ১ম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত শাখা থাকলেও কক্ষের অভাবে একই সাথে পাঠদান করতে হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রাক-প্রাথমিকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশী থাকায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান করতে পারছিনা। ফলে শিক্ষার্থীদের সূষ্ঠ পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। কোন আর্থিক সহায়তা না পাওয়ায় ভাঙ্গা কক্ষের সংস্কার কাজ করতে পারছিনা। প্রায় পাঁচ শতাধীক শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠ পাঠদানের জন্য অনতিবিলম্বে একটি ভবন একান্ত প্রয়োজন।
৫০ নং আমিরাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একই দৃশ্য দেখা গেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জহিরুল হক বলেন, বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত মোট ৯টি শ্রেনীতে পাঠদান করা হয়, কিন্তু পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে একজন শিক্ষককে একই সাথে একাধীক শ্রেনীতে পাঠদান করতে হচ্ছে। এ ছাড়াও বর্তমানে শামিমা আক্তার ও লিজা আক্তার নামে দুই জন শিক্ষিকা অন্যত্র বদলীর জন্য আবেদন করেছেন। পর্যাপ্ত কক্ষের অভাবে পুরোনো ভাঙাচোরা টিনের ঘরে এবং বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টারের নিচে উন্মুক্ত পরিবেশে একই সাথে পাশাপাশি একাধীক শ্রেনীতে পাঠদান করতে হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে একাধীক বার জানানো হলেও নেয়া হয়নি কোন ব্যাবস্থা । পর্যাপ্ত শ্রেনী কক্ষ ও শিক্ষক না পেলে কোনক্রমেই সুষ্ঠ পাঠদান সম্ভব নয়। এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শিক্ষা থেকে চরমভাবে বঞ্চিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার রিয়াজুল হক জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৃতীয় শ্রেনী থেকে দ্বিতীয় শ্রেনীতে উন্নিত করায় শূন্য পদের চেয়ে চাহিদা বেশী। বদলীর নীতিমালায় কোন বিদ্যালয়ে পাঁচ জন শিক্ষক থাকলে যে কেউ বদলীর জন্য আবেদন করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকের শূণ্য পদ পূরনের জন্য আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।এ সংক্রান্ত বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।